১৯শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
রতন কুমার রকি স্টাফ রিপোর্টার (এসইটিভি):
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (এনসিডাব্লিউসি) গর্ভবতী মা’দের নরমাল ডেলিভারী ক্ষেত্রে আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকলেও সেখানে গর্ভবতী মা’দের উপস্থিতি সংখা কম । উপজেলা সদরের সরকারি মা ও শিশু কেন্দ্রে আধুনিক মানের নরমাল ডেলিভারীর ব্যবস্থা রয়েছে । এ কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনা সেবা এবং মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবার যাবতীয় আধুনিক সুবিধা রয়েছে । চলতি অক্টোবর মাসের গত ১৪ দিনে এ কেন্দ্রে নরমাল ডেলিভারী জন্য একজনও গর্ভবতী মা ভর্তি হয়নি । ওই কেন্দ্রে দায়িত্তে থাকা পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা নাজনীন আখতার এর অনিহার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
এ থেকে উত্তরণের জন্য একটি অফিস আদেশ দিলেও তা একমাস ধরে উপেক্ষিত হয়ে আছে।উল্লাপাড়া উপজেলা সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গর্ভবর্তী মা’দের নরমাল ডেলিভারী করানোর জন্য ১০টি শয্যা রয়েছে । এখানে সঠিক সময়ে নরমাল ডেলিভারী এবং মা ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে ।
এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা, জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আগতদের জন্য সবপদ্ধতির সেবা সবই আছে বলে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়। কেন্দ্রেটিতে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডাব্লিউপি) পদে ৩ জনের মধ্যে ১ জন পরিবার পরিকল্পনা সেবা বিভাগে এবং অপর ২ জন মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত রয়েছেন । দীর্ঘদিন ধরে একজন ধাত্রী নার্স ও অফিস সহায়ক পদ শুন্য রয়েছে । সরেজমিনে কেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার পরিকল্পনা বিভিন্ন পদ্ধতি ও পরামর্শের জন্য কিছু সংখ্যক নারী এসেছেন । কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যে চলতি অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারীর ক্ষেত্রে এখানে কোন গর্ভবতী মা ভর্তি হননি ।
গত তিন মাসের মধ্যে সেপ্টেম্বরে ১১ জন, আগষ্টে ১০ জন ও জুলাইয়ে ৯ জন গর্ভবতী মা’দের এখানে নরমাল ডেলিভারী করানো হয়েছে। আর তিন মাসে ১ হাজার ৫শ ৭৬ জন মা ও শিশুকে সাধারণ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা সেবায় চলতি মাসের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ১৬ জন স্থায়ী পদ্ধতি এবং ইমপ্লান্ট (অস্থায়ী) গ্রহণ করেছেন ৩২ জন। গত তিন মাসের মধ্যে স্থায়ী পদ্ধতি নিয়েছেন সেপ্টেম্বরে ৩১ জন, আগষ্টে ০৫ জন ও জুলাই মাসে ১৩ জন। আর ৭২ জন তিন মাসে ইমপ্লান্ট পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন।
এদিকে কেন্দ্রটির পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মোছাঃ নাজনীন আখতার মা ও শিশু কেন্দ্রের আসবাবপত্র, বিভিন্ন চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন রেজিষ্টার খাতা, ফাইলপত্র, ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রীর নিজে কুখ্যিত করে রেখেছেন । ওই সব জিনিসপত্র দুজন পরিদর্শিকার মাঝে সমবন্টন করে দেওয়ার জন্য ওই মা ও শিশু কেন্দ্রের ইনচার্জ ও মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি) ডাঃ মোঃ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত গত ১৩ সেপ্টেম্বর স্বারক নং-পপ/উল্লা/২০২০/৭৪৮ এর মাধ্যমে সমবন্টন করে ওই কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মোছাঃ ফাতেমা খাতুন পাপিয়াকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রটির পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মোছাঃ নাজনীন আখতারকে অফিস আদেশ দেন । কিন্তু গত এক মাস পার হয়ে গেলেও ওই অফিস আদেশ উপেক্ষিত । এখন পর্যন্তও অর্ধেক বুঝিয়ে দওয়া হয়নি । জনগনের প্রশ্ন নাজনীনের খুটির জোর কোথায় ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজনীন আখতার মেডিকেল অফিসারের ডাঃ আব্দুল লতিফ এর উপস্থিতিতে বলেন, তিনি এর জবাবদিহি তাকে নয় জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে দিবেন । এ বিষয়ে কেন্দ্র ইনচার্জ ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ আব্দুল লতিফ (এমসিএইচ-এফপি) জানান প্রায় দেড় মাস হলো দায়িত্বে আছেন । এখানে যাবতীয় সুবিধা থাকলেও হয়তো কারো উপর আস্থা কিংবা অন্য কোন অনিহায় নরমাল ডেলিভারীর ক্ষেত্রে এখানে আসা গর্ভবতী মায়েদের সংখ্যা খুবই কম । তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রটির প্রতি আস্থা কিংবা অনিহা থাকলেও তা ফিরে আনতে নানা ভাবে চেষ্টা করছেন।
এসইটিভি নিউজ /আর কে রকি